ভালোবাসা শব্দটির স’ঙ্গে ছোট-বড় সবাই পরিচিত। এ এমনই এক স’ম্পর্ক যে স’ম্পর্ক বলে কয়ে আসে না, আবার কখন ছিন্ন হয় তাও বোঝা যায় না।
জলিল হাওলাদার বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই। তার স্ত্রী’ তাসলিমা বেগম। এ দম্পতির দুই স’ন্তান রয়েছে। একটি ছে’লে ও একটি মেয়ে। সু’খে-শান্তিতে চলছিলো তাদের সংসার। কিন্তু আচ’মকাই বি’ষাদ নেমে আসে তাদের সু’খের সংসারে। এরপর থেকে সু’খ নামক পাখিটি উড়ে যায় তাদের কপাল থেকে।
স’ম্প্রতি বরগুনার পাথরঘাটায় পৌর শহরের উকিল পট্টিতে চোখে পড়ে বোরকা পরা এক না’রী ভ্যান ঠেলে আ’সছেন। হ’ঠাৎ এমন দৃ’শ্য চোখে পড়ায় অ’বাক হয়ে যান পথচারীরা। কিছুক্ষণ পরই এ প্রতিবেদকের স’ঙ্গে কথা হয় ওই না’রীর। তুলে ধ’রেন তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা। আব্দুল জলিলের বাড়ি বেতাগী উপজে’লার উত্তর চান্দুখালি এলাকায়।
তাসলিমা বেগমের স’ঙ্গে কথা বলে জা’না যায়, তার স্বা’মী জলিল রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাতেন। সু’খেই চলছিলো তাদের সংসার। এক ছে’লে এক মেয়েকে লেখাপড়া করাতেন। স’ন্তানদের নিয়ে স্বপ্ন ছিল অনেক কিন্তু একটি দু’র্যোগ সব অন্ধকার করে দিয়েছে।
আট বছর আগে ঢাকার শাহবাগে বহুতল ভবনের কাজ ক’রতে গিয়ে দোতলা থেকে নিচে পড়ে যান জলিল। এতে জলিলের মেরুদ’ণ্ড ভে’ঙে আ’লাদা হয়ে যায় সেই থেকেই শয্যাশায়ী তিনি।
তাসলিমা বাংলানিউজকে বলেন, সেই থেকেই স্বা’মী কোনো কাজ ক’রতে না পারায় সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেয়। অভাবের কারণে ছে’লে-মেয়ের লেখাপড়াও ব’ন্ধ হয়ে যায়। তিন বেলার জায়গায় এক বেলা খেতে ক’ষ্ট হয়।
মানুষের কাছে হাত পেতে যা পাই তা দিয়ে স্বা’মীর চিকিৎ’সা করাই তাতেও হয়না। এখন স্বা’মীর বড় একটি অ’পারেশন করাতে টাকার দরকার কিন্তু কোনো টাকা পয়সা নেই। অভাবের কারণে ছে’লে-মেয়ে ননদের বাড়িতে থাকে।
একজন না’রী হয়ে ভ্যান চালিয়ে ভিক্ষা করেন এমন প্রশ্ন করা হলে তাসলিমা বলেন, ‘প্যাডে ভাত না থাকলে শরম দিয়া অইবে কি? স্বা’মী যখন ভালো ছিল তখন আমা’রে তো কামাই কই’রা খাওয়াইছে তাইলে সে এখন অ’সু’স্থ মুই কামাই ক’রতে পারমু না ক্যা? এতোটুকু যদি স্বা’মীর জন্য এই বি’পদের সময় ক’রতে না পারি তাহলে কেমন ভালোবাসা, স্বা’মীর প্রতি স্ত্রী’র কেমন প্রে’ম?’
পঙ্গু রাজমিস্ত্রি আব্দুল জলিল বলেন, যখন ভালো ছিলাম তখন সংসার খুব ভালো’ভাবেই চলতো। আজ আমি পঙ্গু হয়ে গেছি। মেরুদ’ণ্ড ভে’ঙে যাওয়ায় প্রায় হয় ব্যাথা হয়। দীর্ঘ দুই মাস ধ’রে মেরুদ’ণ্ডের আ’ঘাতের জায়গায় টিউমা’র হয়েছে ডাক্তার বলেছেন দ্রু’ত অ’পারেশন লাগবে কিন্তু টাকা নেই।
এ বি’ষয়ে পাথরঘাটা উপজে’লার নির্বাহী ক’র্মক’র্তা (ইউএনও) সাবরিনা সুলতানা বাংলানিউজকে বলেন, স্বা’মীর চিকিৎ’সা ও সংসার চা’লানোর জন্য একজন না’রী হয় ভ্যান চা’লিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন এটি সাহসিকতার বি’ষয়।
অ’সহায় এ পরিবারটি ইতোমধ্যে কোন সামাজিক নি’রাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় না এলে তাদের সহায়তার জন্য সংশ্লি’ষ্ট উপজে’লার উপজে’লা নির্বাহী ক’র্মক’র্তার স’ঙ্গে আলোচনা করবো।